বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। একসাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির দিন। অন্য যে কোনো দিনের চেয়ে আজকের দিনটি সম্পূর্ণ আলাদা। ভিন্ন আমেজ, ভিন্ন অনুভূতির।
একদিকে বাংলাদেশের স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, অন্যদিকে আজ ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। ইতিহাসের এ মাহেন্দ্রক্ষণে দুই উৎসব মিলিয়ে এক অন্যরকম বাংলাদেশ। জাতীয় জীবনের এ মহিমান্বিত সময়কে কালের রেখায় ধরে রাখতে রাজধানীর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে চলছে ১০ দিনব্যাপী উৎসবের মহাযজ্ঞ।
আজ এ আনন্দোৎসবের শেষ দিন। ঢাকাসহ সারা দেশের শহর-বন্দর জুড়ে এখন রঙিন আলোর ঝলকানি। সত্যিই এক অন্যরকম অনুভূতি নিয়ে জাতির সামনে এসেছে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী- বিশেষ এ দিন দুটি শুধু বাংলাদেশের মধ্যেই এখন সীমাবদ্ধ নয়, বৈশ্বিক রূপ নিয়েছে।
ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান বাংলাদেশ সফর করেছেন। আজ বাংলাদেশ সফরে আসছেন বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ ভোরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহান মুক্তিযুদ্ধের অমর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন শুরু হবে। সারা দেশেই থাকছে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে ‘মুজিব চিরন্তন’ শীর্ষক মূল প্রতিপাদ্যের ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার শেষ দিন আজ। বিকালে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে অনুষ্ঠেয় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
প্রধান অতিথি থাকবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসী এবং একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ১৯৭১ থেকে ২০২১- স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে নতুন মর্যাদায় আসীন।
দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সারা বিশ্বেই এখন প্রশংসিত হচ্ছে। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নয় মাসব্যাপী রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে আমরা অর্জন করি স্বাধীনতা।
স্বাধীনতালাভের পর বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে দারিদ্র্য আর দুর্যোগের সেই বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পথে। এই সময়ে অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে। বেসরকারি খাত বিকশিত হয়েছে ব্যাপকভাবে। প্রবাস থেকে আসছে বড় অঙ্কের রেমিট্যান্স। কৃষি খাতের উন্নয়ন বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। দেশের তৈরি পোশাকশিল্প, মাছ উৎপাদন ও রপ্তানি, ওষুধশিল্প সারা বিশ্বেই সমাদৃত। এ ছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ আর্থসামাজিক প্রতিটি সূচকে এগিয়েছে
বাংলাদেশ। গড় আয়ু, লিঙ্গসমতা, সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা, নারী শিক্ষা, নারীর রাজনৈতিক অধিকার, নারী ও শিশু মৃত্যুহার, স্যানিটেশন, খাদ্যপ্রাপ্যতা ইত্যাদি নানা সূচকে বাংলাদেশ শুধু ভারত, পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে এগিয়ে নয়; অনেক ক্ষেত্রে অনেক উন্নত দেশকেও ছাড়িয়ে গেছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার। বর্তমানে যা ২ হাজার ৬৪ ডলার। ওই সময়ে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ। বর্তমানে দারিদ্র্যের হার কমে দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে। জিডিপির আকার ৪ লাখ ৮২ হাজার ৩৩৭ কোটি থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ৭৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ১ বিলিয়ন ডলারের কম যা বর্তমানে ৪৪ বিলিয়ন।